বরিশালে হেলিকপ্টার চেপে শ্বশুড়ালয়ে এলো জার্মান বধূ আলিসা

বাংলা ভাষা বোঝেন না, বলতেও পারেন না। ইংরেজী জানেন একটু আধটু। তবুও এক বাঙ্গালী যুবককে বিয়ে করে হেলিকপ্টার আর ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বরিশালের প্রত্যন্ত গ্রামের শ্বশুরালয়ে বউ হয়ে এসেছেন জার্মান তরুনী আলিসা। শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নে উলানবাটনা গ্রামে হেলিকপ্টারে চরে বিদেশীনি বধূর আগমনের খবরে সৃস্টি হয় উৎসবমুখর পরিবেশের। ভীর করেন কৌতুহলী শত শত মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ শহিদুল ইসলামের ছেলে রাকিব হোসেন শুভ রেলওয়ে ডিপ্লোমা পাশ করে ২০১১ সালে জার্মান পাড়ি জমায়। সেখানকার সিটি রেলওয়ে সার্ভিসের সুপারভাইজার হন তিনি। এক পর্যায়ে সেখানকার বেইলী ফিল্ড ডায়লন্ড্রোভ এলাকার বাসিন্দা আলিসা থেওডোরা পিত্তার সাথে পরিচয় হয় তার। আলিসা পেশায় একজন সেবিকা। তার বাবা ও মা দুইজনেই চাকুরীজীবী। আলিসার দাদার মাধ্যমে বিয়ে পাকাপোক্ত হয় শুভ ও আলিসার। ২০২১ সালের ৫ মার্চ আলিসা ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন। তার নতুন নাম রাখা হয় মোসাম্মত আলিসা বেগম। এরপর ওইদিন শুভ’র সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় তিনি।
গতকাল শনিবার ছিলো তাদের প্রথম বিবাহ বার্ষিকী। প্রথম বিবাহ বার্ষিকীতে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য গত শুক্রবার জার্মান থেকে রওয়ানা হয়ে গতকাল সকালে বরিশাল বিমান বন্দরে পৌঁছেন আলিসা ও তার স্বামী। সাথে রয়েছেন আলিসার বান্ধবী লেইসা। পরে বিমান বন্দর থেকে চার্টার্ড হেলিকপ্টারে চড়ে শ্বশুড়ালয় উলাল বাটনাগ্রামে পৌঁছান তারা। হেলিকপ্টার থেকে নেমে আবার ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় কায়দায় তাদের নিয়ে যাওয়া হয় শ্বশুর বাড়িতে। প্রথম বারের মতো শ্বশুড় বাড়িতে আসতে পেরে খুশী আলিসা। এই দেশের মানুষের ভালোবাসা ও আন্তরিকতায় মুগ্ধ আলিসার বন্ধু লেইসাও।
গ্রামের শত শত কৌতুহলী মানুষ আনন্দ-উল্লাস করে আলিসাকে নিয়ে যান শ্বশুড়ালয়ে। বিদেশি বউ পেয়ে খুশী শুভর পরিবার ও প্রতিবেশীরা। আস্তে আস্তে বাংলা শিখিয়ে আলিসার সাথে গল্প করার আশা শুভর দাদীর। এদিকে আলিসা ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে শুভকে বিয়ে করায় খুশী তার মা সহ পরিবারের সদস্যরা। এই বিয়েতে আলিসার দাদা সব চেয়ে ভূমিকা রেখেছে বলে জানান শুভ।
আগামী ৯ মার্চ ওই গ্রামে দেশীয় কায়দায় গায়ে হলুদ অনুষ্ঠিত হবে আলিসা ও শুভর। এ উপলক্ষ্যে ১০ মার্চ ভোজন করানো হবে ইউনিয়নবাসীকে।